গুচ্ছ ভর্তি পরীক্ষা ২০২৫ চান্স পাওয়ার উপায় | Gst Admission Preparation 2025 

এইচএসসি পরীক্ষা শেষ? এবার চিন্তা গুচ্ছ ভর্তি পরীক্ষা নিয়ে? তোমরা যারা ২০২৫ সালে গুচ্ছ (GST) ভর্তি পরীক্ষায় অংশ নিতে যাচ্ছ, তাদের জন্য এই ব্লগপোস্টটি খুবই গুরুত্বপূর্ণ। চান্স পাওয়ার জন্য কী কী করতে হবে, কিভাবে প্রস্তুতি নিতে হবে, কোন বিষয়গুলো মাথায় রাখতে হবে – সবকিছু নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করা হবে। তাই, শেষ পর্যন্ত মনোযোগ দিয়ে পড়ো!

গুচ্ছ ভর্তি পরীক্ষা এখন অনেক শিক্ষার্থীর কাছেই পছন্দের একটা মাধ্যম। কারণ, এখানে একসাথে অনেকগুলো বিশ্ববিদ্যালয়ে পরীক্ষা দেওয়ার সুযোগ পাওয়া যায়। এতে একদিকে যেমন খরচ বাঁচে, অন্যদিকে সময়ও বাঁচে। তাহলে চলো, জেনে নেওয়া যাক গুচ্ছ ভর্তি পরীক্ষা ২০২৫-এ কিভাবে তুমি নিজের একটা সিট নিশ্চিত করতে পারো।

গুচ্ছ ভর্তি পরীক্ষা কেন এত গুরুত্বপূর্ণ?

গুচ্ছ ভর্তি পরীক্ষা (GST) আসলে শিক্ষার্থীদের জন্য একটা দারুণ সুযোগ। এর মাধ্যমে তুমি এক পরীক্ষায় অংশ নিয়ে ১৯টা পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির সুযোগ পেতে পারো। ভাবো, আলাদা আলাদা করে ১৯টা বিশ্ববিদ্যালয়ে পরীক্ষা দেওয়ার ঝামেলা থেকে মুক্তি!

গুচ্ছ ভর্তি পদ্ধতির সুবিধাগুলো কী কী?

  • খরচ কম: আলাদা আলাদা বিশ্ববিদ্যালয়ে আবেদনের খরচ বেঁচে যায়।
  • কম্পিটিশন সহজ: একটা পরীক্ষার মাধ্যমেই ভালো বিশ্ববিদ্যালয়ে চান্স পাওয়ার সুযোগ থাকে।
  • সময় সাশ্রয়: বিভিন্ন পরীক্ষার জন্য দৌড়াদৌড়ি করতে হয় না।

গুচ্ছ ভর্তি পরীক্ষা ২০২৫: যোগ্যতা ও খুঁটিনাটি

২০২৫ সালের গুচ্ছ ভর্তি পরীক্ষায় অংশগ্রহণের জন্য কিছু নির্দিষ্ট যোগ্যতা থাকতে হবে। শিক্ষাবর্ষ ২০২৪-২০২৫ অনুযায়ী বিজ্ঞান, মানবিক ও বাণিজ্য শাখা থেকে এইচএসসি/সমমান পরীক্ষায় উত্তীর্ণ শিক্ষার্থীরা তাদের নিজ নিজ ইউনিটে (A, B, C) আবেদন করতে পারবে।

আবেদনের যোগ্যতা: ইউনিট ভিত্তিক

ভর্তি পরীক্ষায় অংশগ্রহণের জন্য ইউনিট ভিত্তিক কিছু যোগ্যতা রয়েছে, যা নিচে উল্লেখ করা হলো:

ক ইউনিট (বিজ্ঞান): বিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থীদের জন্য পদার্থ বিজ্ঞান, রসায়ন, জীববিজ্ঞান/গণিত এবং বাংলা/ইংরেজি বিষয়ে ভালো দখল থাকতে হবে।

খ ইউনিট (মানবিক): মানবিক বিভাগের শিক্ষার্থীদের জন্য বাংলা, ইংরেজি এবং সাধারণ জ্ঞান বিষয়ে ভালো প্রস্তুতি থাকতে হবে।

গ ইউনিট (বাণিজ্য): বাণিজ্য বিভাগের শিক্ষার্থীদের জন্য হিসাববিজ্ঞান, ব্যবসায় সংগঠন ও ব্যবস্থাপনা, ফিন্যান্স এবং বাংলা/ইংরেজি বিষয়ে জ্ঞান থাকতে হবে।

গুরুত্বপূর্ণ তারিখ

ভর্তি নিয়ে গুচ্ছভুক্ত ওয়েবসাইটে একটি বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হয়েছে। বিজ্ঞপ্তি অনুযায়ী, মার্চের ৫ তারিখ দুপুর ১২টা থেকে আবেদন শুরু হয়ে গেছে, এবং ১৫ মার্চ রাত ১১টা ৫৯ মিনিট পর্যন্ত আবেদন করা গেছে।

গুচ্ছ ভর্তি পরীক্ষার মানবন্টন ও ফলাফল

গুচ্ছ ভর্তি পরীক্ষার মানবন্টন এবং ফলাফল সম্পর্কে স্পষ্ট ধারণা থাকাটা খুবই জরুরি। কোন ইউনিটে কোন বিষয়ের উপর কত নম্বর থাকবে, তা আগে থেকে জেনে গেলে প্রস্তুতি নিতে সুবিধা হয়।

মানবন্টন (সকল ইউনিটের জন্য)

প্রত্যেক শিক্ষার্থীকে নির্ধারিত কেন্দ্রে ভর্তি পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করতে হবে। প্রতিটি ইউনিটে ১০০ নম্বরের MCQ পদ্ধতির পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবে। সকল ইউনিটের পরীক্ষার জন্য ১ ঘণ্টা বরাদ্দ। প্রতিটি প্রশ্নের জন্য থাকবে ১ নম্বর এবং প্রতিটি ভুল উত্তরের জন্য ০.২৫ নম্বর কাটা হবে এবং গুচ্ছ ভর্তি পরীক্ষায় ক্যালকুলেটর ব্যবহার করা যাবে না।

যেকোনো ইউনিট (A/B/C)-এর পরীক্ষার্থী বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রদত্ত শর্ত সাপেক্ষে অন্যান্য ইউনিটের সংশ্লিষ্ট বিষয়সমূহের ভর্তির আবেদনের জন্য বিবেচিত হবে। জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ড, বাংলাদেশ কর্তৃক এইচএসসি পরীক্ষার পাঠ্যসূচি অনুসারে ভর্তি পরীক্ষার বিষয়সমূহ ও মানবন্টন নিম্নে প্রদত্ত হলো:

বিষয়ক ইউনিট (বিজ্ঞান)খ ইউনিট (মানবিক)গ ইউনিট (বাণিজ্য)
বাংলা৩৫১৫
ইংরেজি৩৫১৫
পদার্থ বিজ্ঞান২৫
রসায়ন২৫
গণিত/জীববিজ্ঞান২৫
সাধারণ জ্ঞান৩০
হিসাববিজ্ঞান৩৫
ব্যবসায় সংগঠন ও ব্যবস্থাপনা৩৫
আইসিটি২৫
মোট১০০১০০১০০

ফলাফল (সকল ইউনিটের জন্য)

ফলাফল সাধারণত ভর্তি পরীক্ষার কয়েক সপ্তাহ পর প্রকাশ করা হয়। গুচ্ছের ওয়েবসাইটে অথবা সংশ্লিষ্ট বিশ্ববিদ্যালয়ের ওয়েবসাইটে ফলাফল পাওয়া যায়।

গুচ্ছ বিশ্ববিদ্যালয় ভর্তি প্রস্তুতি: A টু Z গাইডলাইন

গুচ্ছ ভর্তি পরীক্ষায় ভালো করতে হলে সঠিক পরিকল্পনা ও কৌশল অবলম্বন করা খুবই জরুরি। যেহেতু এখানে অনেকগুলো বিশ্ববিদ্যালয় একসাথে পরীক্ষা নেয়, তাই কম্পিটিশনটাও একটু বেশি হয়।

ক ইউনিট প্রস্তুতি (বিজ্ঞান বিভাগ)

বিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থীদের জন্য পদার্থ, রসায়ন, গণিত এবং জীববিজ্ঞান এই চারটি বিষয় খুবই গুরুত্বপূর্ণ।

ফিজিক্স: বেসিক ফর্মুলা এবং কনসেপ্ট ভালোভাবে বুঝতে হবে। কঠিন সমস্যা সমাধানের জন্য নিয়মিত প্র্যাকটিস করতে হবে।

কেমিস্ট্রি: বিক্রিয়া, রাসায়নিক সূত্র এবং পর্যায় সারণী মুখস্থ রাখতে হবে।

গণিত: ত্রিকোণমিতি, ক্যালকুলাস এবং বীজগণিত ভালোভাবে প্র্যাকটিস করতে হবে।

জীববিজ্ঞান: উদ্ভিদবিজ্ঞান ও প্রাণিবিজ্ঞান, এই দুটি অংশেই সমান গুরুত্ব দিতে হবে।

খ ইউনিট প্রস্তুতি (মানবিক বিভাগ)

মানবিক বিভাগের শিক্ষার্থীদের জন্য বাংলা, ইংরেজি এবং সাধারণ জ্ঞান এই তিনটি বিষয় খুবই গুরুত্বপূর্ণ।

বাংলা: ব্যাকরণ, সাহিত্য এবং বিখ্যাত লেখকদের জীবনী সম্পর্কে জানতে হবে।

ইংরেজি: ভোকাবুলারি, গ্রামার এবং ইংরেজি সাহিত্য সম্পর্কে ধারণা রাখতে হবে।

সাধারণ জ্ঞান: বাংলাদেশ ও আন্তর্জাতিক বিষয়াবলী, ইতিহাস, ভূগোল, অর্থনীতি এবং সাম্প্রতিক ঘটনা সম্পর্কে জানতে হবে।

গ ইউনিট প্রস্তুতি (বাণিজ্য বিভাগ)

বাণিজ্য বিভাগের শিক্ষার্থীদের জন্য হিসাববিজ্ঞান, ব্যবসায় সংগঠন ও ব্যবস্থাপনা, ফিন্যান্স এবং বাংলা/ইংরেজি এই বিষয়গুলো গুরুত্বপূর্ণ।

হিসাববিজ্ঞান: হিসাব সমীকরণ, জাবেদা, খতিয়ান এবং আর্থিক বিবরণী তৈরি করতে জানতে হবে।

ব্যবসায় সংগঠন ও ব্যবস্থাপনা: ব্যবসায়ের মৌলিক ধারণা, ব্যবস্থাপনা এবং মার্কেটিং সম্পর্কে জ্ঞান থাকতে হবে।

ফিন্যান্স: আর্থিক বাজার, বিনিয়োগ এবং ঝুঁকি সম্পর্কে জানতে হবে।

বাংলা ও ইংরেজি: এই দুটি বিষয়ে ভালো দখল থাকলে ভালো স্কোর করা সম্ভব।

যেসব বিশ্ববিদ্যালয় গুচ্ছ থেকে বের হয়ে গেছে, তাদের প্রস্তুতি কিভাবে নিবে?

যেসব বিশ্ববিদ্যালয় গুচ্ছ থেকে বের হয়ে গেছে, তাদের জন্য আলাদাভাবে প্রস্তুতি নিতে হবে। তাদের নিজস্ব ভর্তি পরীক্ষার মানবন্টন এবং সিলেবাস অনুসরণ করে প্রস্তুতি নিতে হবে। এক্ষেত্রে বিগত বছরের প্রশ্নপত্র সমাধান করা খুবই জরুরি।

স্বতন্ত্র বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি পরীক্ষার জন্য প্রস্তুতির কৌশল

স্বতন্ত্র বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি পরীক্ষার জন্য প্রস্তুতির সময় কিছু বিষয় মনে রাখতে হবে:

সিলেবাস: প্রথমে সংশ্লিষ্ট বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি পরীক্ষার সিলেবাস ভালোভাবে জানতে হবে।

মানবন্টন: কোন বিষয়ে কত নম্বর আছে, তা জেনে গুরুত্ব অনুযায়ী প্রস্তুতি নিতে হবে।

প্রশ্নপত্র: বিগত বছরের প্রশ্নপত্র সংগ্রহ করে সমাধান করতে হবে।

সময় ব্যবস্থাপনা: পরীক্ষার সময় সঠিকভাবে কাজে লাগানোর জন্য মক টেস্ট দিতে হবে।

কিছু গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন ও উত্তর

গুচ্ছ ভর্তি পরীক্ষা নিয়ে তোমাদের মনে অনেক প্রশ্ন ঘুরপাক খাচ্ছে, তাই না? নিচে কিছু সাধারণ প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হলো:

গুচ্ছ বিশ্ববিদ্যালয়ের তালিকা কী?

২০২৫ সালের তথ্য অনুযায়ী, গুচ্ছভুক্ত ১৯টি পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় রয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর নাম নিচে দেওয়া হলো:

জিএসটি গুচ্ছ বিশ্ববিদ্যালয় ভর্তি পরীক্ষার যোগ্যতা কী?

জিএসটি গুচ্ছ বিশ্ববিদ্যালয় ভর্তি পরীক্ষার যোগ্যতা ইউনিট অনুযায়ী ভিন্ন হয়। সাধারণত, বিজ্ঞান, মানবিক ও বাণিজ্য বিভাগ থেকে এইচএসসি উত্তীর্ণ শিক্ষার্থীরা আবেদন করতে পারে। তবে, প্রতিটি ইউনিটের জন্য আলাদা জিপিএ এবং বিষয়ভিত্তিক শর্ত থাকে।

জিএসটি গুচ্ছ বিশ্ববিদ্যালয়ে আবেদনের যোগ্যতা কী?

আবেদনের যোগ্যতা নির্ভর করে তুমি কোন ইউনিটে আবেদন করছো তার ওপর। সাধারণত, বিজ্ঞান বিভাগের জন্য গণিত, পদার্থবিজ্ঞান, রসায়ন এবং জীববিজ্ঞান বিষয়গুলোতে ভালো নম্বর থাকতে হয়। মানবিক বিভাগের জন্য বাংলা, ইংরেজি এবং সাধারণ জ্ঞান বিষয়ে ভালো দখল থাকতে হয়। বাণিজ্য বিভাগের জন্য হিসাববিজ্ঞান, ব্যবসায় সংগঠন ও ব্যবস্থাপনা এবং ফিন্যান্স বিষয়ে ভালো জ্ঞান থাকতে হয়।

গুচ্ছের আবেদনের লাস্ট ডেট কবে?

২০২৫ শিক্ষাবর্ষে গুচ্ছের আবেদনের শেষ তারিখ ছিল ১৫ মার্চ, ২০২৪।

শেষ কথা

গুচ্ছ ভর্তি পরীক্ষা ২০২৫-এ ভালো ফল করার জন্য এখন থেকেই প্রস্তুতি শুরু করে দাও। সঠিক পরিকল্পনা, কঠোর পরিশ্রম এবং আত্মবিশ্বাসের সাথে এগিয়ে গেলে তুমি অবশ্যই সফল হবে। মনে রাখবে, চেষ্টা করলে সবকিছুই সম্ভব!

Leave a Comment

Explore the future of technology with us. From the latest gadgets and AI innovations to expert tips and in-depth tech insights, we bring you everything you need to stay ahead in the digital world. Join us in shaping the next generation of technology!

© Copyright 2022 powered by MD Tanvir Hossain